আঞ্চলিক-কার্যালয়,-বরিশাল
Wellcome to National Portal

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার


Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৯ জুন ২০২১

বিপিএসসির ইতিহাস

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন  প্রধানত বিভিন্ন সরকারি চাকুরি ও পদে নিয়োগ দানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি সাংবিধানিক সংস্থা। সংস্থাটি সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতি, পদায়ন, বদলি, শৃঙ্খলা ও আপিলের মতো বিষয়ের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গেও জড়িত। ব্রিটিশ শাসনের ঐতিহ্যবাহী অধিকাংশ দেশে ‘সিভিল’ বা ‘পাবলিক’ সার্ভিস কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ প্রদান এবং চাকুরি সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে সকল সিদ্ধান্ত যাতে মেধা ও সমদর্শিতার নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয় তা নিশ্চিতকরণ। বাংলাদেশে এই সংস্থা বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন নামে অভিহিত।

ভারত উপমহাদেশে ১৯২৬ সালে প্রথম পাবলিক সার্ভিস কমিশন নামে একটি কমিশন গঠিত হয় এবং এটি ব্রিটিশ ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন চাকুরিতে নিয়োগ দানের কার্যক্রম পরিচালনা  করত। ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইন এবং পরবর্তী ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন অনুযায়ী বিভিন্ন প্রদেশে দায়িত্বশীল সরকার গঠিত হওয়ার পর ১৯৩৭ সালে বেঙ্গল পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ প্রদেশ পর্যায়েও অনুরূপ কমিশন গঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর ব্রিটিশ ভারতের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের আদলে পাকিস্তানের কেন্দ্র ও প্রদেশ উভয় পর্যায়েই অনুরূপ পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠিত হয়। এভাবেই ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে পূর্ববঙ্গে (পরে পূর্ব পাকিস্তান) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রতিষ্ঠা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতালাভের পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৩৪ নং আদেশবলে ১৯৭২ সালের মে মাসে প্রাথমিক পর্যায়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (প্রথম) ও পাবলিক সার্ভিস কমিশন (দ্বিতীয়) নামে দুটি আলাদা কমিশন গঠিত হয়। কিন্তু ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে গৃহীত সংবিধানে পাবলিক সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত ধারাসমূহ কার্যকর করার লক্ষ্যে সরকার নতুন একটি রাষ্ট্রপতি-আদেশ (রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ২৫, ১৯৭৩) জারি করে যা কার্যত ১৯৭২ সালের মে মাস থেকে পাবলিক সার্ভিস কমিশন দুটির আনুষ্ঠানিক নিয়মিতকরণ সম্পন্ন করে। অবশ্য সরকার ১৯৭৭ সালের নভেম্বর মাসে দুটি কমিশনের স্থলে একটি কমিশন স্থাপন করার লক্ষ্যে আরেকটি অধ্যাদেশ জারি করে এবং ১৯৭৭ সালের ২২ ডিসেম্বর এই কমিশনের নামকরণ হয় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন।

আইনগত ভিত্তির পরিবর্তে বরং সাংবিধানিক ভিত্তিই বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশের সংবিধানের পাঁচটি অনুচ্ছেদ সংবলিত একটি অধ্যায়ে (৯ম ভাগের ২য়) কমিশনের গঠনপ্রণালী ও কার্যাবলি নির্দেশিত হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক (কার্যত প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে) পাঁচ বছর মেয়াদে অথবা তাদের বয়স পঁয়ষট্টি বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত সময়ের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। নিয়োগযোগ্য সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন সদস্যের সংখ্যা সংবিধানে নির্দিষ্ট করা হয় নি। তবে ১৯৭৭ সালে জারিকৃত রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশে চেয়ারম্যানসহ এ সংখ্যা সর্বোচ্চ পনেরো (ন্যূনতম ছয়) নির্ধারণ করা হয়েছে। সদস্য হিসেবে নিয়োগ লাভের জন্য বিশেষ যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। তবে কমিশনের মোট সদস্যের অন্তত অর্ধেক থাকবেন ন্যূনতম বিশ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সরকারি কর্মকর্তা। সাধারণত সরকারি বিভাগ থেকে নিযুক্ত চেয়ারম্যান ও সদস্যরা সকলেই শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন এবং অন্যান্যদের অধিকাংশই থাকেন প্রবীণ শিক্ষাবিদ। সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণের পর একজন কর্মকর্তা পুনরায় কোনো সরকারি চাকুরিতে (পাবলিক সার্ভিস কমিশন সহ) নিয়োগ লাভের যোগ্য বিবেচিত হন না। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে, যিনি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ সত্ত্বেও চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত এক মেয়াদের জন্য এবং একইভাবে কমিশনের একজন সদস্যও অবসর গ্রহণের পর কমিশনের সদস্য বা চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত এক মেয়াদের জন্য পুনরায় নিয়োগ পেতে পারেন।